নিউইয়র্কে লড়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশি ডাক্তার ফেরদৌস

|

করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে স্থবিরতা তৈরি করেছে। বইয়ে দিচ্ছে লাশের মিছিল। এই মহামারির মধ্যে অনেক মানুষ নিজের চিন্তা বাদ দিয়ে এগিয়ে এসেছেন মানবসেবায়। তাদেরই একজন নিয়ইয়র্কে বসবাসরত ডা. ফেরদৌস খন্দকার।

লকডাউনের মাঝে নিয়ইয়র্কে বিভিন্ন বাংলাদেশিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দিয়ে আসছেন মেডসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ফেরদৌস। পাশাপাশি, বাংলাদেশের মানুষের সেবা দেয়ার মানসে তিনি গড়ে তুলেছেন করোনাসেবা ডট কম (coronasheba.com) নামে একটি ওয়েবসাইট। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সহজেই পেয়ে যাবেন। এ বিষয়ক যেকোনো প্রশ্নের উত্তরও পাবেন তারা। এ জন্য ঢাকায় চারজন ডাক্তারের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি চিকিৎসক পুল। চালু করা হয়েছে দুটি হটলাইন। যার নম্বরগুলো হচ্ছে +৮৮০১৯৪৬–৬৭৮৪২১, ‍+৮৮০১৯৭৮–৩১৮৮৩৩। এসব নম্বরে ফোন করে চিকিৎসকদের কাছ থেকে করোনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন সাধারণ মানুষ। কোথায় গিয়ে পরীক্ষা করাবেন, কোথায় গেলে চিকিৎসাসেবা পাওয়া যাবে, লক্ষণ বিশ্লেষণ করে কিছু সাধারণ ধারণা ও পরামর্শও দিচ্ছেন ডা. ফেরদৌস ও তার চিকিৎসক দল।

একই সঙ্গে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষকে খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হবে। তবে এই সেবাটি আপাতত ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি এই উদ্যোগে অর্থ সহায়তা দিতে চান, তাহলে ওয়েবসাইটে দেওয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী সেটাও করতে পারবেন। বাংলাদেশের ডাক্তাররাও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে এই উদ্যোগে নিজেদের যুক্ত করতে পারেন।

এই সময়েই সত্যিকার মানবিকতা দেখানোর সুযোগ বলে মনে করেন ডা. ফেরদৌস। একে দেখছেন, দেশ সেবারই একটি অংশ হিসেবে। তার কর্মযজ্ঞ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সেখানে তিনি জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন অসুবিধার কথা জানিয়েও শত শত ফোন আসছে ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকারের কাছে। অনেক ফোনের উত্তর দিচ্ছেন তিনি। চেষ্টা করছেন নিজের মতো করে সমস্যার সমাধান করার।

ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, এমন সময় আমরা কখনোই দেখিনি। মানুষের নানা ধরনের সেবা দরকার। আমি আমার ছোট্ট দলটিকে নিয়ে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি মানুষের পাশে থাকার। অনেক রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে পড়তে এসে এখন মহাবিপদে রয়েছেন। আবার অনেকের বাড়িতে খাবার নেই। আমরা চেষ্টা করছি তাদের পাশে থাকার।

অবস্থা এখন এমন যে দিনে গড়ে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করছেন ডা. ফেরদৌস ও তার দল। তবু রণে ভঙ্গ দেয়ার কথা ভাবছেন না। করোনার বিরদ্ধে এ লড়াইয়ে যে জিততে হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply