৬০ বছরে সর্বোচ্চ ধসের মুখে চীনের অর্থনীতি

|

করোনার ধাক্কায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই অনিশ্চয়তার মুখে। আর চীনেই যেহেতু এই রোগের সূত্রপাত, তাই অবশ্যই চীন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এক ধাক্কায় অর্থনীতির পতন হতে চলেছে ১০ শতাংশ। যা ৬০ বছরে প্রথমবার বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া ১৯৭৬ সালের পর দেশটির অর্থনীতিতে সংকোচনের কোনো নজির নেই।

এদিকে রোববার থেকে চীনে আবারও বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এদিন দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত হন ৯৯ জন। আর সোমবার সংক্রমিত হয়েছেন ১০৮ জন। এছাড়া রোববার কোনো মৃত্যু না থাকলেও সোমবার দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৮২১৬০ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ৩৩৪১ জনের।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত তিন মাসের আর্থিক অবস্থার বিশ্লেষণ করে চীনের অর্থনীতির পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, এই মহামারীর কারণে কলকারখানা বন্ধ। লকডাউনের ফলে দেশটির চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশটির ৪ লাখ ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান। দেশটির কর্পোরেট নিবন্ধন তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোর অর্ধেকই গত তিন বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।

এদিকে বিশ্বকে আরেকটি দ্বিতীয় মহামন্দার জন্য প্রস্তুত থাকতে সতর্ক করেছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়না। ব্যাংকটি বলছে, ঝুঁকির আশঙ্কা কম তবে বিশ্বকে অবশ্যই সবচেয়ে খারাপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়াকেই এর বড় কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে।

চীনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দেখে মনে করা হচ্ছে, আগামী দিনে ইউরোপ ও আমেরিকাও একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলেছে। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ১৫ থেকে ২৫ শতাংশের পতন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারীজনিত কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া মার্কিন অর্থনীতি কবে আবার চালু করা হবে সে বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন।

ইউবিএসের অর্থনৈতিক গবেষণা প্রধান তাও ওয়াং ধারণা করছেন, চীনের অর্থনীতি ১০ শতাংশ সংকুচিত হবে। এটা হলে দেশটির সেবা খাতের ৫ থেকে ৬ কোটি মানুষ এবং শিল্প ও নির্মাণ খাতের আরও দুই কোটি মানুষ চাকরি হারাবে।

তবে ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াং বলেন, যদি মহামারীর প্রকোপ শিগগিরই কমে তাহলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়া এবং নীতিগত সহযোগিতার (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে) মাধ্যমে এই সংখ্যাটা হয়তো দ্রুতই কমে আসতে পারে। করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমতে শুরু করার পর মার্চ থেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সরকার কিছু কিছু কলকারখানা, রেস্তোরাঁ ও দোকানপাট পুনরায় খুলে দেয়া শুরু করে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply