করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

|

‘আমার করোনো হয়নি অথচ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে করোনার জন্যই আমাকে মারা যেতে হবে।’-গত ২৬ মার্চ ফেসবুকে এমন পোস্ট দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন চাকমা। ফুসফুসে টিউমারের অসুখে ভুগতে থাকা সুমন মারাই গেলেন। সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী

খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলায় বাড়ি সুমন চাকমার। তার বাবা সুপেন চাকমা একজন কৃষক। সুমন বাবা মায়ের বড় সন্তান। সুমনের সহপাঠী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সুমনের অসুস্থতা দেখা দেয়। দেশের চিকিৎসকেরা জানান, সুমনের ফুসফুসে ক্যানসার হয়েছে। পরে তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা বলেন, ক্যানসার না, ফুসফুসে ছোট একটা টিউমার হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সুস্থ বোধ করায় সে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে পড়াশোনা শুরু করে।

এ বছরের শুরুর দিকে সুমনের শরীর খারাপ হতে থাকে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে সুমনের চিকিৎসা ব্যহত হয়। পরিবারের অভিযোগ, ঢাকা একাধিক নামিদামি হাসপাতালে যোগাযোগ করে কোথাও চিকিৎসা পাননি সুমন। একপর্যায়ে অসহায় পরিবার তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। সেখানেই আজ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। কোনো হাসাপাতালে ভর্তি হতে না পেরে সুমন গত ২৬ মার্চ ফেসবুকে অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

জানা গেছে, সুমন চাকমা ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের ২২-তম ব্যাচের ছাত্র সুমন জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।

সুমনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টা খুব দুঃখজনক। খবর পেয়ে আমি তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর চিকিৎসা না পেয়ে এমন অকাল মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় পড়লে যেন প্রক্টরিয়াল টিমের সাথে বা আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেন। আমরা সার্বক্ষণিক শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply