গলাচিপায় সাংবা‌দি‌কের উপর হামলা, ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনতাই

|

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ডেইলি সান পত্রিকার পটুয়াখালী প্রতিনিধি আব্দুল কাইয়ুম (২২) সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় ওই সংবাদকর্মীর ক্যামেরা ও মোবাইল জোর ক‌রে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় কাইয়ুমকে উদ্ধার করতে গিয়ে প্রতিবেশী আব্দুল রহিম ও পলাশ হাওলাদার নামে দুই ব্যক্তি আহত হ‌য়ে‌ছে।

পুলিশের কাছে হামলার ঘটনা বর্ণনা দেয়ায় আহত পলাশের পরিবারকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। আহত ওই সংবাদকর্মী বর্তমানে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এ হামলার ঘটনার পর এখন অবধি গলাচিপা থানা পুলিশ মামলা নেয়‌নি ব‌লে আহত সাংবাদিকের পরিবারের পক্ষ থেকে অ‌ভি‌যোগ করা হ‌য়ে‌ছে।

আহত সাংবাদিক কাইয়ুম জানায়, গলাচিপা উপজেলার আমখোলার বাউড়িয়া এলাকায় একটি জলাশয় সরকারিভাবে বন্দোবস্ত নিয়ে স্থানীয় বাউরিয়া সমবায় সমিতির লোকজন মাছ চাষ করে আসছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকার মাহাবুব, নজরুল ইসলাম, জহিরুল মামুন আল-আমীন, মজিবর, হানিফসহ ২০-২৫ জনের একটি বাহিনী দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং লাঠিসোটা নিয়ে ওই মাছের ঘেরের বাঁধ কাটতে শুরু করে। এসময় ঘটনাক্রমে উপস্থিত ডেইলি সান পত্রিকার পটুয়াখালী প্রতিনিধি আব্দুল কাইয়ুম সেই দৃশ্য তার ক্যামেরায় ধারণ করে। ক্যামেরায় ধারণ করার দৃশ্য দেখে ওই বাহিনীরা কাইয়ুমের ওপর ঝাঁপিয়ে পরে। এ সময় কাইয়ুমকে ব্যাপক মারধোর করে। মারধোরের এক পর্যায় কাইয়ুমের সাথে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার ক‌রে কাইয়ুমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে এবং পুলিশকে অবহিত করে।

এদিকে হামলাকারীদের হাত থেকে সংবাদকর্মীকে বাঁচাতে গিয়ে স্থানীয় আব্দুল রহিম ও পলাশ হাওলাদারও হামলার শিকার হয়েছে। দ্বিতীয় দফা সন্ত্রাসীদের হামলা থেকে রক্ষা পেতে পলাশ হাওলাদার বর্তমানে গলাচিপা উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। সংবাদকর্মীকে উদ্ধার করতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। হামলাকালে একটি জলাশয় সাঁতার কেটে রক্ষা পায় পলাশ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সংশ্লিষ্ট থানা থেকে পুলিশ গেলে পলাশসহ স্থানীয়রা পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়। এতে ওই বাহিনীরা ক্ষিপ্ত হয়ে দ্বিতীয় দফা হামলার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে পলাশকে। এসময় স্থানীয় নুরে আলমের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পায় পলাশ। পলাশকে না পেয়ে হামলাকারীরা পলাশের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর গলায় রামদা ধরে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসে।

এদিকে ঘটনার পর গলাচিপা থানা পুলিশকে অবহিত করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলাকারীরা ভুক্তভোগী পরিবার ও উপস্থিত সাক্ষীদের ধমকায় বলে অভিযোগ করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরে বাহিনীরা পুনরায় পলাশকে হামলা চালানো প্রস্তুতি নেয়। এসময় গলাচিপা উপজেলার কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে পলাশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে উপজেলা শহরের এক নিকটতম আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।

জান‌তে চাইলে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ আক্তার মোর্শেদ জানায়, ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু হামলাকারীদের পুলিশ পায়নি। তা‌দের আটক করার চেষ্টা চল‌ছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply