করোনাভাইরাস: বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়াল

|

মাত্র ৩ মাসে করোনাভাইরাস কেড়ে নিলো ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ১০ লাখের বেশি। কেবল সংক্রমণ বা প্রাণহানি নয়, কোভিড নাইনটিনের থাবায় একরকম অচল সারা বিশ্ব। নজিরবিহীন লকডাউনে ঘরবন্দি বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ। ১৮৮ দেশে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাত্র কয়েক মাসে পুরো বিশ্বকে গ্রাস করেছে ক্ষুদ্র এক ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল উহানে যখন বিস্তার শুরু হয়, তখন কেউ কল্পনাও করেনি করোনাভাইরাসের ব্যাপকতা হবে এতটা ভয়াবহ।

চীনে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছর ডিসেম্বরে। ৩১ ডিসেম্বর নিউমোনিয়া সদৃশ এক রোগের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অবহিত করে চীন। কিছুদিনের মধ্যে জানা যায় নতুন প্রজাতির করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যার নাম দেয় কোভিড নাইনটিন। ১১ জানুয়ারি এ রোগে প্রথম মৃত্যুর ঘোষণা দেয় চীন। এর দু’দিন পরই থাইল্যান্ডে উহান ফেরত একজনের শরীরে পাওয়া যায় এ ভাইরাসের সংক্রমণ। কিছুদিনের মধ্যেই সংক্রমণ মেলে জাপানেও। ততদিনে নিশ্চিত হয়, মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে এ ভাইরাস।

ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গণপরিবহন বন্ধ, লকডাউনসহ নানা পদক্ষেপ নেয় দেশটি। তবুও জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানি। প্রথম মৃত্যুর ঠিক এক মাসের মাথায় হাজার ছাড়িয়ে যায় মৃতের সংখ্যা। আরও একমাস পর ছাড়িয়ে যায় ৩ হাজার। ভাইরাসের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয় বেইজিং প্রশাসন। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় মাত্র ৭ ও ১৫ দিনে উহানে গড়ে তোলে আলাদা হাসপাতাল। মার্চ নাগাদ কোভিড নাইনটিন বিস্তারে লাগাম টানতে সক্ষম হয় দেশটি।

তবে সতর্কতা গ্রহণে একটু দেরিই করে ফেলে বাকি বিশ্ব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ৩০ জানুয়ারি বৈশ্বিক সতর্কতা জারির পরও আমলে নেয়নি অনেক দেশ। তাইতো পরবর্তীতে বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং, চীনফেরতদের বিষয়ে কড়াকড়ি কোনোকিছুই ঠেকাতে পারেনি করোনার বিস্তার। একে একে কোভিড নাইনটিন ছড়াতে থাকে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে।

মার্চের মাঝামাঝি ভাইরাস সংক্রমণের কেন্দ্র হয়ে ওঠে ইউরোপ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু আর সংক্রমণ। ২২ ফেব্রুয়ারি ইতালিতে প্রথম মৃত্যুর এক মাস যেতে না যেতেই মৃতের সংখ্যায় দেশটি ছাড়িয়ে যায় চীনকে। এই মুহূর্তে প্রাণহানির শীর্ষে দেশটি। এর পরেই রয়েছে প্রতিবেশী স্পেন। সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি মৃতের সংখ্যার দিক থেকেও তালিকার প্রথম দিকে মার্কিন মুল্লুক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, যেকোনো সময় বৈশ্বিক মহামারির কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে এশিয়া।

১১ মার্চ কোভিড নাইনটিনকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভাইরাসটি প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশে টিকা কিংবা কার্যকরী ওষুধ নিয়ে গবেষণা চললেও, এখনও সাফল্যের মুখ দেখেনি কেউ। তবে আশার কথা প্রচলিত ওষুধ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমেই সুস্থ হয়েছেন ৮০ শতাংশের বেশি করোনা আক্রান্ত রোগী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply