অবশেষে গাইবান্ধা ছাড়লেন সেই বিতর্কিত পিআইও

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
অবশেষে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কর্মস্থল ছাড়লেন দুর্নীতিসহ নানা কর্মকান্ডে বিতর্কিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকার।

রবিবার (১৫ মার্চ) বিকেলে নুরুন্নবী সরকারের ছাড়পত্র (রিলিজ) নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা আলহাজ মো. ইদ্রিস আলী সরকার। একই সঙ্গে অধিদপ্তরের আদেশে সুন্দরগঞ্জে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন সদর উপজেলার পিআইও আনিছুর রহমান।

জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা আলহাজ মো. ইদ্রিস আলী সরকার মুঠোফোনে বলেন, ‘গত ৯ মার্চ অধিদপ্তরের আদেশে ১৬ মার্চের মধ্যে বাঘাইছড়িতে যোগদানে ছাত্রপত্র (রিলিজ) নিয়েছেন নুরুন্নবী। ১৬ মার্চের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থল বাঘাইছড়িতে যোগদান না করলে তিনি স্ট্যান্ড রিলিজ হবেন বলেও আদেশে উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়া অধিদপ্তর সদর উপজেলার পিআইও আনিছুর রহমানকে সুন্দরগঞ্জের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পালনের আদেশ দিয়েছেন। আগামি ১৭ মার্চ থেকে দাপ্তরিক কাজ ও দায়িত্ব পালন শুরু করবেন আনিছুর।

মো. ইদ্রিস আলী আরও বলেন, ‘দুই দফার তদন্তে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণে শাস্তির সুপারিশ করে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা হয়েছে তা জানা নেই। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার-অসদচারণসহ শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং আর্থিক দুর্নীতি প্রমাণে ছাড় পাওয়ার সুযোগ নেই নুরুন্নবীর। প্রতিবেদনের আলোকেই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেবে অধিদপ্তর।

এর আগে, অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশে গেল বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নুরুন্নবীকে চট্রগ্রামের স্বদ্বীপে বদলির আদেশ দেয় অধিদপ্তর। কিন্তু দুর্নীতি-লুটপাটে রাজত্ব কায়েমের কারণে স্ট্যান্ড রিলিজের পরেও সুন্দরগঞ্জ ছেড়ে যেতে চাননি নুরুন্নবী। উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়ে বদলিস্থগিতে রিট পিটিশন আদেশে বহাল থাকেন তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারী অধিদপ্তরের আপিল আবেদনে চেম্বার জজ আদালতে সেই রিট আদেশ স্থগিত হয়। পরে ৯ মার্চ নুরুন্নবীকে বাঘাইছড়িতে বদলির আদেশ দেয় অধিদপ্তর।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে সুন্দরগঞ্জে যোগদানের পর ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাটের ঘটনায় নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে দুদকসহ ব্যাক্তিগতভাবে পাঁচটি মামলা হয়। নুরুন্নবীর দুর্নীতি কর্মকান্ড নিয়ে (গেল বছর সেপ্টেস্বরে সারাদেশে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান) দেশের স্বনামধন্য কয়কটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়।

দুর্নীতির সংবাদ প্রচারে ১৬ অক্টোবর রংপুর আদালতে ১২ গণমাধ্যমকর্মীর বিরুদ্ধে মানহানীর দুটি মামলা করেন নুরুন্নবী। এছাড়া ক্ষমতা-প্রভাব বিস্তার আর হামলা-মামলাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে আলোচিত হন নুরুন্নবী।

গত ৫ বছরে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণ পায় স্থানীয় প্রশাসন, অধিদপ্তরসহ দুদকের কমিটি। শাস্তির সুপারিশ করে কমিটি একাধিক প্রতিবেদন দিলেও অদৃশ্য কারণে নুরুন্নবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি অধিদপ্তর।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply