ভিসা হওয়ার পরও ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রী আটকে গেলেন

|

ভিসা হওয়া পরও বাংলাদেশের প্রায় ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রীর মক্কা গমন আটকে গেল।

বৃহস্পতিবার সকালে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে শাহজালাল বিমানবন্দরে অপেক্ষামান যাত্রীদের কাউকেই বোর্ডিং পাস দেয়া হয়নি। সকালে সৌদির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বিমানগুলোতেও কোনো ওমারাহ যাত্রী ছিলেন না।

হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন,

‘করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরবে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। যে কারণে এসব ওমরাহ যাত্রীর ভিসা আটকে গেছে।’
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়। সে নোটিশে বলা হয়েছে, ওমরাহ পালন ও মসজিদে নববী পরিদর্শন এবং টুরিস্ট ভিসা সাময়িক বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সৌদির সরকার।

এ বিষয়ে একটি টুইটও করেছে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সেখানে লেখা হয়েছে, ‘সৌদি আরবে করোনাভাইরাসের প্রবেশ এবং ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক এবং আগাম প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে যথাযথ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ওমরাহ ও ট্যুরিস্ট ভিসা সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে একটি হোটেলে ‘বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজ-২০২০’ ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে হাব সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘আটকে পড়া ওমরাহ যাত্রীদের বিষয়ে সকালে সৌদি দূতবাসের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে দূতাবাস যাদের ভিসা আছে তাদের ব্যাপারেও কিছু বলতে পারেনি। ’

তিনি বলেন, ‘সকালে বিমানবন্দরে আমাদের যে যাত্রীরা গিয়েছেন তারা সবাই অপেক্ষামান আছেন, কাউকেই বোর্ডিং পাস দেয়া হয়নি। ’

আপাতত কোনো নতুন ভিসা ইস্যু হবে না জানিয়ে হাব সভাপতি বলেন, ‘নতুন তো কেউ যেতে পারছেই না, যাদের ভিসা করা আছে, তারাও যেতে পারবে না বলে মনে হচ্ছে। ’

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেতে সৌদি এয়ারলাইন্সের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটা মেইলের অপেক্ষায় আছেন বলে জানান হাব সভাপতি।

হাব সভাপতি বলেন, ‘সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মেইল না আসা পর্যন্ত তারা কাউকেই বোর্ডিং পাস দেবেন না।’

এমন পরিস্থিতিতে জানা গেছে, আটকে যাওয়া ১০ হাজার ওমরাহ যাত্রীদের ভিসার বিপরীতে প্রায় ৫ হাজার টিকিট কাটা হয়ে গেছে। এদের মধ্যে লো-কস্ট এয়ারলাইন্সের নন-রিফান্ডেবল টিকিটগুলো মোট মূল্য ৯ কোটি টাকা।

এসব যাত্রীদের কোনো আর্থিক ক্ষতি হবে কি না প্রশ্নে হাব সভাপতি বলেন, ’সব মিলে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়ে গেছে ইতিমধ্যে। যে টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। এ ক্ষতি এখন এজেন্সি ও ওমরাহ যাত্রীদের বহন করতে হবে।’

বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ’ভিসাগুলোর জন্য সৌদি সরকারকে আইবিএনের মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সৌদিতে হোটেল ভাড়া বাবদ মূল্য আগেই পরিশোধ করা হয়েছে। সেই ভিসা ফি আর হোটেল ভাড়া আর ফিরে পাওয়া যাবে না।’

তবে শুধু বাংলাদেশই নয় সাময়িক সময়ের জন্য করোনার প্রাদুর্ভাব অঞ্চলের কোনো দেশকেই সৌদি আরব ভিসা দেবে না বলে গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

আল-আরাবিয়ার খবরে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যখন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, তখনই এই পদক্ষেপ নেয়া হল।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত পাওয়া খবের করোনাভাইরাসে ইরানে ১৯ জন মারা গেছেন। চীনের বাইরে এই ভাইরাসে সর্বাধিক ইরানেই মারা গেছে।

এছাড়া বাহরাইনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে নয়জন। ওমানে সংক্রমণ ঘটেছে তিনজনের দেহে।

কুয়েত, ইরাক, মিসর, ইসরায়েলেও সংক্রমণ ঘটেছে করোনাভাইরাসের। সোমবার দেশগুলোতে একজন করে আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তবে সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হয়নি বলে বুধবার নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply