অফিসের বসের পছন্দের মানুষ হবেন যেভাবে

|

আপনার অফিসে খুব ঝামেলা হচ্ছে, বস আপনাকে পছন্দ করেন না। উনি মাঝে মাঝে চশমার ফাঁক দিয়ে এমনভাবে আপনার দিকে তাকান যেন আপনি অন্য কোনো গ্রহ থেকে এসেছেন বলে মনে হয়। উনি কখনই আপনার কথা বা কাজকে গুরুত্ব দেন না। আপনাকে দেখলে কিংবা আপনার কথাবার্তা শুনেও তিনি বিরক্ত হন। সর্বোপরি, তিনি আপনার উপস্থিতিও সহ্য করতে পারেন না।

আপনি আপনার বসকে রিপোর্ট করেন, তিনি আপনার কাছ থেকে কাজ বুঝে নেন এবং আপনার সহযোগিতায় বিভিন্ন কাজ করে উনি উনার বসের কাছে পেশ করেন। কিন্তু টপ লেভেলে উনি কখনই আপনার নাম প্রকাশ করেন না বরং আপনার কাজকে নিজের কাজ বলে চালিয়ে দেন। অনেক সময় আপনাকে উনি এড়িয়ে চলেন। কিন্তু কেন তিনি এমন করছেন? চলুন আপনার বস কেন আপনাকে অপছন্দ করছেন, তার কিছু কারণ জেনে নেয়া যাক:

১। আপনি যখন ভালো কাজ করবেন, আপনার কাজে সফলতা আসবে তখন আপনার বস আপনাকে ভয় পেতে পারেন এ জন্য যে, আপনি তাকে টেক্কা দিতে পারেন। অনেকেই একটি মানসিক দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগে। অনেকে ভাবে, এ বাচ্চা ছেলে আমার চেয়ে বেশি বোঝে? ফলে তিনি আপনাকে কোনো কাজ স্বাধীনভাবে করতে দিতে চাইবেন না। সব ক্ষেত্রে তিনি ক্রেডিট নিতে চাইবেন। এক্ষেত্রে সাজেশন হল, ভালো কাজ অব্যাহত রাখুন। আপনি অবশ্যই সামনের দিকে এগোবেন।

২। এক্ষেত্রে দোষটা কিন্তু আপনার। আপনি যদি কোনো কাজ বারবার ভুল করেন, তাহলে আপনার বস সুযোগ পাবেন। তিনি আপনার ওপর আস্থা হারাবেন। কথায় আছে, যে কাজ করে সে ভুল করে। ভুল হতেই পারে, কিন্তু ক্রমাগত একই ভুল করাটা কিন্তু অন্যায়। এতে করে একটি সময় আপনার চাকরিও চলে যেতে পারে। তাই নিজেকে দক্ষ ও হুশিয়ার করে গড়ে তুলুন।

৩। আপনার বস যদি ধারণা করেন, আপনি তাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত তার সমালোচনা করেন বা আড়ালে তাকে নিয়ে বাজে কথা বলছেন এবং বিষয়টি যদি কিছুটা সত্য হয়ে থাকে তাহলে আপনার ও আপনার বসের সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নিতে পারে।

৪। আপনার বস যদি তার বসের কাছে কোনো খারাপ ব্যবহার পান, তার প্রভাবটাও আপনার ওপর পড়তে পারে। আর সেই খারাপ ব্যবহারের কারণ যদি আপনি হন, তাহলে তো কোনো কথাই নেই।

৫। আপনি আপনার বসের চেয়ে বেশি স্মার্ট, বেশি আপডেট, আপনি আপনার বসের থেকে এ প্রজন্ম সম্পর্কে বেশি জানেন, তাহলে আপনার বস আপনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবতে পারেন। তিনি আপনার কাজের ওপর নির্ভর থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে আপনাকে অপছন্দ করতে পারেন।

৬। অনেকে বসের মন বুঝে চলতে পারে না। এতে করে বসের সঙ্গে একটি দূরত্ব তৈরি হয়। কিছু কিছু বস চান তার কর্মীরা তাকে সব ধরনের কাজে সমর্থন দিক। কিছু বস আছেন যারা চান, তিনি হাসলে তার অধীনস্থরাও হাসবে। কিছুটা চাটুকার ধরনের। সব ক্ষেত্রে চাটুকারিতা না আবার। অনেক সময় দেখা গেল, বস খুব কাজে বিজি। এমন সময় আপনি গিয়ে বললেন, আজ আগে আগে চলে যাবেন। যেখানে বস পরিশ্রম করছেন, সেখানে আপনি যদি তার সঙ্গে সহযোদ্ধা না হন, কীভাবে বস আপনার ওপর আস্থা রাখবেন? এক্ষেত্রে আপনার কমন সেন্সের অভাব বলতে হবে।

৭। আপনার যদি অনেক বন্ধু থাকে আর আপনি যদি সেই বন্ধুদের নিয়ে অফিসে আড্ডাখানা বানিয়ে ফেলেন তাহলে আপনার বস আপনার ওপর বিরক্ত হতেই পারেন। অনেকে অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ ফেলে রেখে অকারণে ফোনালাপ করে। এসব বস পছন্দ করেন না। অনেকে ফোনে মিথ্যাচার করেন অপর প্রান্তের লোকের সামনে। তাহলে আপনি যে কাল বসের সঙ্গে মিথ্যা বলবেন না তার নিশ্চয়তা কী? মিথ্যা কথা কিন্তু বিশ্বাসের জায়গাটা হালকা করে দিচ্ছে।

৮। জীবনে বড় হতে গেলে, দায়িত্ব নিতে জানতে হবে। যে কাজ জানে তাকে লোকে খুঁজে নেয়। কাজের পুরস্কার হচ্ছে দায়িত্ব। অনেকে দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চায়, কাজ নিতে চায় না। এ ধরনের ফাঁকিবাজ টাইপের কর্মীকে বসরা ভালো চোখে দেখেন না।

৯। আপনি আপনার বেতন নিয়ে খুশি নন, কিন্তু যে বেতন আপনি পাচ্ছেন বস সেটাকেই ন্যায্য ভাবছেন। এমতাবস্থায় বসের সঙ্গে আপনার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, বস আপনাকে পছন্দ করেন না। অনেক কর্মী আছেন যারা নিত্যদিন বসের কানের কাছে গিয়ে বেতন বাড়ানোর কথা বলেন, এতে করে তিনি ক্রমেই বসের অপছন্দের পাত্রে পরিণত হন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply