ফেসবুকে ১৬ শতাংশ অ্যাকাউন্ট ভুয়া

|

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের যে পরিমাণ আইডি বা অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার ১৬ শতাংশ অ্যাকাউন্টই ভুয়া অথবা নকল বলে জানিয়েছে পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণী সাময়িকী স্ট্যাটিসটা।

সম্প্রতি জার্মানির এ সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে এমন একটি ইনফোগ্রাফ প্রকাশ করেছে। আবার ফেসবুক সূত্রের বরাতে স্ট্যাটিসটা জানায়, এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পৃথিবীতে সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৪০ কোটি।

তবে ফেসবুক এ আইডির সংখ্যা ব্যবহারকারীর সংখ্যার থেকেও বেশি। যদিও স্বয়ং ফেসবুকই বলছে, তাদের সাইটে যত আইডি আছে তার ১৬ শতাংশই ভুয়া অথবা নকল। আর এ নকল মূলত একই ব্যক্তির একাধিক আইডিকে বোঝান হচ্ছে বলে ফেসবুকের বরাতে জানায় বিশ্লেষণী সাময়িকী স্ট্যাটিসটা।

স্ট্যাটিসটা যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০১৫ সালে সক্রিয় ব্যবহারকারীর তুলনায় এতে নকল আইডির অনুপাত ছিল প্রায় ৫ শতাংশ।

২০১৬ সালে এসে সেটি হয় ৬ শতাংশ, ২০১৭ সালে ১০ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে তা আসে ১১ শতাংশে। তবে ওই ইনফোগ্রাফ অনুযায়ী ২০১৯ সালে নকল আইডির সংখ্যা আগের বছরের অনুপাতই রয়েছে অর্থাৎ বাড়েনি। আবার ফেসবুকে ২০১৫ সালে ভুয়া আকাউন্টের অনুপাত ছিল দুই শতাংশের কম।

২০১৬ সালে এর সংখ্যা কিছুটা কমে এক শতাংশ হয়। আবার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে এ সংখ্যা অনেকটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ থেকে ৪ শতাংশ। ২০১৮ সালে ভুয়া আকাউন্টের অনুপাত আরও একটু বেড়ে হয় ৫ শতাংশ।

যদিও এ সংখ্যাটি ২০১৯ সালে এসে আর বাড়েনি। ফেসবুকে থাকা এসব ভুয়া ও নকল অ্যাকাউন্ট থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত হয় বলে মনে করেন সাইবার ক্রাইম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক ও এসব ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধে ব্যাপক তৎপরতা দেখায়। এমনকি নিজস্ব এলগরিদমের মাধ্যমে ভুয়া ও নকল আইডি শনাক্ত করে বন্ধ করে দেয়।

ফেসবুকে বিপজ্জনক অনলাইন কন্টেন্ট বন্ধের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আরও কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মার্ক জুকারবার্গ।

বলেছেন, কোনো বক্তব্য ‘আইনসম্মত ও বৈধ’ কিনা- সেটি বিচার করা ফেসবুকের মতো কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ হতে পারে না। তবে একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত কড়াকড়ি করা হলে সেটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে বলে উল্লেখ করে এ বিষয়ে জুকারবার্গ চীনের উদাহরণ দেন।

সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তাবিষয়ক এক সম্মেলনে বক্তব্য দেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ। বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে থাকা ফেসবুকের পক্ষে জুকারবার্গ বলেন, ‘নির্বাচনের সময় অনলাইনে হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় ফেসবুক কাজ করেছে। তবে আমি মনে করি, ক্ষতিকর কনটেন্টের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত।

অন্যদিকে যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া ও বিপজ্জনক কন্টেন্ট তৈরি করে তারাও নিজেদের পরিচয় গোপন করতে আইপি অ্যাড্রেস লুকিয়ে রাখার কাজে ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

আর এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩৫ হাজার কর্মীর একটি দল রয়েছে ফেসবুকের, যাদের কাজ প্রতিটি কন্টেন্টের মূল্যায়ন এবং এর নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখা। কৃত্রিম বুদ্ধির সাহায্যে সংস্থাটি প্রতিদিন দশ লাখের বেশি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে বলেও জানান জুকারবার্গ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply