নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের সময় হামলা, মামলা করলেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক

|

গত ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচন চলাকালীন সময়ে একটি অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের উপর হামলার ঘটনায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক সুমন।

গতকাল সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি।

মামলার কপিতে সুমন জানান, বিনীত নিবেদন এই যে আমি মোস্তাফিজুর রহমান সুমন, পিতা-মৃত: মো. মনসুর আলী, অনলাইন নিউজ পোর্টাল আগামীনিউজ ডটকম এর অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক। ঠিকানা: (…..) আপনার সমীপে জানাচ্ছি যে, গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমার গণমাধ্যমের দেয়া এ্যাসাইনমেন্ট অনুযায়ী ঢাকা উত্তরের কয়েকটি কেন্দ্রে সংবাদ সংগ্রহ করছিলাম। আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে সংবাদ পাই উত্তরের মোহাম্মদপুর থানা এলাকার ৩৪ নং ওয়ার্ডের রায়েরবাজারস্থ জাফরাবাদের সাদেক খান সড়ক এলাকায় এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন (টিফিন ক্যারিয়ার মার্কা) এর অনুসারীরা সহিংসতা চালাচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌছাই। আশপাশে কর্মরত অনেক সংবাদকর্মীও ঘটনাস্থলে ছুটি আসেন। এসময় সাদেক খান সড়ক থেকে ৩৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিরল প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ খোকনের (টিফিন ক্যারিয়ার মার্কা) সমর্থনে তার অনুসারীদের একটি বড় সশস্ত্র মিছিল জাফরাবাদ এলাকার দিকে যেতে দেখা যায়। মিছিলটির সামনে গিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে আমি আমার মোবাইল ফোন স্যামসাং এ-৫০এস প্রফেশনাল দিয়ে তাদের ভিডিও ধারণ করি, যার কয়েকটি আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। পরবর্তিতে আর একটি ভিডিও ধারণের সময় এই মিছিল থেকে অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী-ক্যাডার আমার ভিডিও করা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় তারা অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল, আমার হাতে থাকা মোবাইল ও ঘাড়ে থাকা ক্যানন ৫ডি মার্ক৩ ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হয়। এতে আমি বাধা দিলে তারা আমার উপর চড়াও হয়। তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। তখন আমি আত্মরক্ষায় দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে অন্যত্র যেতে চাইলে তাদের কয়েকজন আমাকে ধরে কিল ঘুষি মারতে থাকে। এর মাঝে সামনে থেকে একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার মাথার বাম পাশে কোপ মারে। এতে আমার মাথা ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। আমি অনেক অনুনয় বিনয় করার পরও তারা আমাকে হকিস্টিক লাঠি রড দিয়ে মারত থাকে। তারা আমার মোবাইল ফোন, ক্যামেরা (ক্যানন ৫ডি মার্ক৩ এবং লেন্স ৭০-২০০ইএফ) ও মানিব্যাগ (মানিব্যাগে ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, অফিসের আইডি কার্ড, নগদ আনুমানিক ৪হাজার ৮শত টাকাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিলো) ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খোয়া যাওয়া এসব মালামালের আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। চলে যাবার সময় তারা বলে সাংবাদিকতা দেখাস, বেশি বাড়াবড়ি করলে, মামলা করলে জানে মেরে ফেলবো। কুপিয়ে শেষ করে ফেলবো। সন্ত্রাসীরা চলে যাবার পর আমাদের সহকর্মীরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নিয়ে আসে। দ্রুত চিকিৎসা দিতে আমাকে ওয়ার্ড নং ১০৩ এ ভর্তি করা হয়। আমার মাথার বাম পাশে ৬টি সেলাই দিতে হয়েছে। তারা হথ্যার উদ্দেশ্যে আমা রউপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল। চিকিৎসাধীন থকাার কারণে আমার এ অভিযোগ দাখিলে কিছুটা বিলম্ব হলো।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply