ফেলে যাওয়া শিশু দত্তক নিলেন জেলা প্রশাসক

|

ভৈরব প্রতিনিধি
ভৈরবে ফেলে যাওয়া তিনদিনের শিশুটি আদালতের আদেশে দত্তক নিয়েছেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক। গতকাল সোমবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক রফিকুল বারী এই আদেশ দেন। বর্তমানে শিশুটি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানার হেফাজতে রয়েছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তের প্রবেশন অফিসার ভৈরবে এসে শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসকের নিকট হস্তান্তর করবেন বলে জানান ইউএনও।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় ভৈরবের ইউএনও লুবনা ফারজানা নিজে হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে মাতৃস্নেহে তার বাসায় নিয়ে আসেন। আদালতের আদেশ দেয়ার পর কিশোগঞ্জের জেলা প্রশাসক তাকে নির্দেশ দিয়েছেন শিশুটিকে তার হেফাজতে আনতে ।

গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এক নারী ভৈরবে বাস থেকে নেমে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক ভিক্ষুকের কাছে শিশুটি রেখে টয়লেটে যাবার কথা বলে পালিয়ে যায়। ওই ভিক্ষুক এক ঘণ্টা পর স্হানীয় এক যুবক আশরাফুলকে ঘটনাটি জানায়। পরে সে ঘটনাটি ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানাকে অবহিত করে। তারপর ইউএনও’র নির্দেশে আশারাফুল এদিন রাত ১০ টায় উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে ডাঃ বুলবুল আহমেদের নিকট শিশুটি রেখে আসে। এরপর ইউএনও ‘র নির্দেশে শুক্রবার রাতেই পুলিশ এব্যাপারে থানায় একটি জিডি করে। শিশুটি এখন সুস্হ আছে বলে জানান হাসপাতালের ডাক্তার বুলবুল আহমেদ।

জানা গেছে, শিশুটি উদ্ধারের পর গত রোববার উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে শিশুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে একটি আবেদন করে। আদালতের বিচারক রফিকুল বারী এদিন রোববার কোন আদেশ দেননি। এদিকে শিশুটি দত্তক নিতে ২০ জন আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান ইউএনও। এর মধ্য খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক গতকাল সোমবার শিশুটিকে দত্তক নিতে আবেদন করে। বিকেলে বিচারক তাকে দত্তক দেয়ার আদেশ প্রদান করেন। আদেশ পাওয়ার পর সোমবার রাতে শিশুটিকে পরম মমতায় ইউএনও লুবনা ফারজানা নিজ বাসায় নিয়ে আসে।

ইউএনও লুবনা ফারজানা জানান, শিশুটির নিরাপদ হেফাজতের জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আদালতে আবেদন করা হয় গত রোববার। কিন্ত আদালত রোববার আদেশ দেননি। সোমবার ডিসি মহোদয় শিশুটি দত্তক নেয়ার আবেদন করলে আদালত ডিসিকে দত্তক দেয়ার আদেশ দেন।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক সারোয়ার মুর্শেদ চৌধুরী জানান, আমি ও আমার স্ত্রী সুমনা আনোয়ারের আগেই ইচ্ছা ছিল কোন স্হানে শিশু পেলে দত্তক নিব। এরই মধ্য সুযোগ পেয়ে সোমবার আদালতে আবেদন করি। আদালত শিশুটি আমার কাছে দত্তক দিতে আদেশ দেন। আদেশটি পেয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ভীষণ খুশি হয়েছি। তিনি বলেন আমার দুই বছরের একটি মেয়ে আছে। তার নাম সামিহা চৌধূরী। এখন আমার দুটি মেয়ে হলো। শিশুটিকে লালন-পালন করে মানুষের মত মানুষ করার চেষ্টা করব।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply