সেকেন্ডে ৩৮০, মিনিটে ২২ হাজার ৮৩১ ডলার আয় বিল গেটসের

|

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিলগেটস বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিজনেস ইনসাইডার বিল গেটসের আয় নিয়ে মজার কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রতি সেকেন্ডে তার আয় ৩৮০ ডলার বলা হয়, এ হিসাবে প্রতি মিনিটে আয় ২২ হাজার ৮৩১ ডলার। তার নিট সম্পদের মূল্য ক্রোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও বাহামার মোট দেশজ উৎপাদনের সমান।

আরও মজার বিষয় হল ব্যাচেলর ডিগ্রি আছে এমন একজন আমেরিকান, সারা জীবনে গড়ে আয় করেন ২২ লাখ ডলার। আর বিল গেটস এ অর্থ মাত্র দেড় ঘণ্টায় আয় করেন! এখন তিনি যদি প্রতিদিন ১০ লাখ ডলার খরচ করবেন বলে ঠিক করেন, তাহলে লাগবে ২৮৫ বছর। বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটসের যত সম্পদ তাতে কোনো চাহিদাই তার অপূর্ণ থাকার কথা নয়।

তবুও সব টাকা খরচ করতে চাইলে কী কিনবেন সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রের লেকসাইড হাইস্কুলের এক অনুষ্ঠানে। সেখানে বিল গেটস জানান, সব টাকা তিনি হ্যামবার্গার খেয়ে ও স্যুট কিনে খরচ করতে চান। তিনি আরও জানান, ১১০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের পুরোটাই তিনি তার সন্তান ফিবি, রোরি ও জেনিফারকে দেবেন না। তার মতে, বাচ্চাদের টাকার বন্যায় ভাসিয়ে দেয়া উচিত নয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনে ধনকুবের ওয়ারেন বাফেটের জীবনী প্রকাশিত হয়। সেখানে ১৫০ কোটি ডলারের মালিক ওয়ারেন বাফেট বলেছিলেন, এত বেশি অর্থ তিনি সন্তানদের দেবেন না যাতে তারা কোনো কিছু করতেই না পারে।

বিল গেটস জানান, একই রকমের চিন্তা-ভাবনা তার মধ্যেও ছিল। কিন্তু এ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্পষ্ট কিছু শুনতে পাওয়াটা বেশ আকর্ষণীয় ছিল।

পড়াশোনায় ফাঁকি দেয়া বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এ ধনী হার্ভার্ডে পড়ার সময় যেসব কোর্সের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন, তার একটিতেও হাজিরা দেননি। এর পরিবর্তে তার ভালো লাগত যেসব ক্লাস, সেখানে বসে যেতেন। তবে তার মুখস্থবিদ্যা ছিল দুর্দান্ত। ফলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাকে আটকায় কে? ফলে ক্লাস না করেও সবসময় ‘এ’ গ্রেড পাওয়া ছাত্র ছিলেন বিল গেটস।

বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস দাতব্য কাজে জড়িত। তাই তার আয়ের বিশাল একটি অংশ খরচ হয় বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে।

জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বসের দেয়া তথ্য হচ্ছে, বিল গেটস এখন পর্যন্ত তার নিট সম্পদের ২৭ শতাংশ জনহিতে দান করেছেন। টাকার অঙ্কে তা ৩৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। তিনি মূলত মাইক্রোসফটের শেয়ার বিক্রি করে তা দান করেছেন। তবে নিজের সম্পদ ও অন্যান্য পারিবারিক ফাউন্ডেশন মিলিয়ে তার দানের পরিমাণ আরও বেশি করেছেন ৫০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

আয়ের সিংহভাগে দান করলেও বিল গেটসের জীবন মোটেও সাদামাটা নয়। তার নিজস্ব জেট প্লেন আছে। এ বিষয়ে বিল গেটস মজার ছলে বলেন, এটি আসলেই বিলাসবহুল, তাই কিছু টাকা খরচ করা যায়। তিনি জানান, নিজস্ব বিমানে ভ্রমণের কিছু সুবিধা আছে। এতে ভ্রমণ করার সময়ও কাজ-কর্মে মনোযোগ দেয়া যায়।

তবে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বিল গেটস কোম্পানির সব লোক নিয়ে উড়োজাহাজের ইকোনমি ক্লাসে উঠেছেন। কোম্পানির রীতি ছিল সব কর্মীকে ইকোনমি ক্লাসে যেতে হবে। বিল গেটসও তা মেনে চলতেন। বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়েও কর্মীকে নিয়ে ইকোনমি ক্লাসে যেতে গেটসের মধ্যে কোনো অস্বস্তি ছিল না।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply