‘লিবিয়ার সাথে এরদোগানের চুক্তি ‘ছিঁড়ে ফেলতে’ একমত হাফতার’

|

লিবিয়ার প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার খলিফা হাফতার গ্রিস সফর করছেন। আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠেয় বার্লিন সম্মেলনের আগে এ সফরে গেলেন তিনি। এ দিকে বার্লিন সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানোয় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গ্রিস। লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণকারী হাফতার বাহিনী এবং ত্রিপোলিতে জাতিসঙ্ঘ অনুমোদিত স্বীকৃত সরকারের মধ্যে ৯ মাসের লড়াই অবসানের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা হলো বার্লিনের এই আলোচনা।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাশ জানিয়েছেন, কমান্ডার খলিফা হাফতার রোববারের বার্লিন সম্মেলনে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহী। মাশ আরো বলেন, হাফতার যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আল জাজিরার খবরে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ব্যক্তিগত বিমানে এথেন্সের উদ্দেশে রওনা দেন হাফতার। এএফপিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার একটি হোটেলে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন খলিফা হাফতার। গ্রিক সরকার হাফতারের সাথে এ বৈঠকের খবর আগে প্রকাশ করেনি।

এ দিকে এক টেলিভিশন ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার এথেন্সে পৌঁছানোর পর হাফতারকে একটি বিলাসবহুল হোটেলে নেয়া হয় এবং সেখানে তিনি গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোস ডেন্দিয়াসের সাথে প্রাথমিক সাক্ষাৎ করেন। গ্রিসকে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও বার্লিন সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এবং ত্রিপোলি সরকার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী তুরস্কের সাথে সামুদ্রিক ও সামরিক সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় অ্যাথেন্স ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

হাফতারের গ্রিসের বৈঠক বিষয়ক খবর জানাতে গিয়ে ইউরোনিউজ শিরোনাম করেছে, “তুরস্ক-লিবিয়া সমুদ্রবিষয়ক চুক্তিটি ‘ছিঁড়ে ফেলতে’ রাজি হাফতার: গ্রিস”। গ্রিসের শীর্ষ কর্মকর্তারা এমন কথাই বলেছেন হাফতারের সাথে বৈঠক বিষয়ে। বার্লিন আলোচনায় আমন্ত্রিত না হয়ে ক্ষুব্ধ এথেন্স চায় লিবায়ার সাথে তুরস্কে সমুদ্রবিষয়ক চুক্তিটি বাতিল হোক। হাফতারেরই একই লক্ষ্য। তুরস্কের মদদপুষ্ট ফায়েজ আল সাররাজের ত্রিপোলি সরকারের প্রভাব খর্ব করতেই তার এটি প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বার্লিন সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চলমান সঙ্ঘাত থেকে সব বিদেশী শক্তি প্রত্যাহার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন। এমনটিই জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।

বার্লিন সম্মেলনে রাশিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আফ্রিকান ও আরব দেশের কর্মকর্তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী মিতসতাকিস গত বৃহস্পতিবার বলেন, গ্রিসকে বার্লিনের আলোচনা থেকে বাদ দেয়া ‘ভুল’ এবং গতকাল এ বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের সাথে কথা বলবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধরত দুই পক্ষ জাতিসঙ্ঘ স্বীকৃত ত্রিপোলি সরকার ও মিসর-সৌদি-আমিরাত সমর্থিত জেনারেল হাফতার বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও এখনো চুক্তির চূড়ান্ত স্বাক্ষর হয়নি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply