ছাগল চুরির অভিযোগে নির্যাতন, আ’লীগ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ :

নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় দুই যুবককে ছাগল চুরির অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে ধরে এনে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে আটকে রেখে মধ্য মধ্যযুগীয় কায়দায় লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘরের বিতর তিন ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের পর দুই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি এ বর্বর নির্যাতনের ঘটনার ১০ দিন পর ভুক্তভোগী নাঈমের মা নাজমা বেগম বাদি হয়ে কুতুরপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি আলাউদ্দিন হাওলাদার সহ ৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আসলাম হোসেন জানান, ছাগল চুরির মামলায় নাঈম ও রাতুলকে স্থানীয় লোকজন ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ওই মামলায় তাদের কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে তাদের উপর বর্বর নির্যাতনের ঘটনাটি পুলিশের জানা ছিলো না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।

নাঈমের মা নাজমা বেগম অভিযোগ করেন, গত ১ জানুয়ারি ফতুল্লার কুতুবপুরে নিশ্চিন্তপুর এলাকার শফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে দুটি ছাগল চুরি যায়। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক শফিকুল ইসলাম স্থানীয় দুই যুবক নাঈম ও রাতুলকে সন্দেহ করে। বিষয়টি শফিকুল স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হাওলাদারকে জানায়। আলাউদ্দিন হাওলাদার লোক পাঠিয়ে রাতুল ও নাঈমকে তার বাড়িতে ঢেকে এনে বিচার সালিসের নামে রুহুল বাহিনীর সদস্য জাহিদ, ইউনুস, কাদিরসহ কয়েকজন মিলে কাঠের রোল ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক হাতে পায়ে পায়ের পাতায় উরুতে নির্যাতন চালায়। ওই সময় বিচার সালিশে উপস্থিত কেউ একজন মোবাইল ফোনে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। গত ৯ জানুয়ারি বর্বর এ নির্যাতনের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নাঈমের মা সেটি জানতে পেরে ফতুল্লা থানায় আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দিন হাওলাদার ও তার নির্যাতনকারী ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কুতুবপুর ইউনিয়ন ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি মেম্বার সদস্য আলাউদ্দিন হওলাদার তার নিজ বাড়িতে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, তিন ঘণ্টা নয় দশ লাঠি দিয়ে তাদের কয়েকটি বাড়ি দেয়া হয়েছে। দুইজনই ছাগল চুরির কথা স্বীকার করেছে। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় এবং পুলিশ মুন্সিগঞ্জ থেকে ছাগল দুটি উদ্ধার করেছে। তবে আমি কাউকে নির্যাতন করিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply