আ’লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদে কারা আসছেন?

|

সদ্য সমাপ্ত কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির ৪২ পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ৩৯টি পদ। এর মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীতে ১০টি এবং কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাহী কমিটির ২৮টি পদ ফাঁকা রয়েছে। এছাড়া, উপদেষ্টামণ্ডলীতেও ফাঁকা আছে ১০টি পদ। এসব পদে কারা আসছেন সেটি নিয়েই এখন জল্পনা-কল্পনা ও দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার নতুন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর প্রথম সভা। এই সভায় পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তরুণ নেতারা যেমন সম্পাদকমণ্ডলীর পদ পাওয়ার চেষ্টা করছেন তেমনি এখন পর্যন্ত কমিটিতে না থাকা অনেক প্রবীণ নেতাও উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

আগের কার্যনির্বাহী সংসদের ১০ প্রভাবশালী নেতার নাম নেই এখন পর্যন্ত ঘোষিত কমিটিতে। তাদের মধ্যে সাতজনই মন্ত্রিসভার সদস্য। তারা হলেন- বিদায়ী কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আইনবিষয়ক সম্পাদক ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও সরকারের মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এবং ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

এটি নিয়ে মূলত দুই ধরনের মত পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম মতটি হচ্ছে, সরকার ও দল পৃথকভাবে শক্তিশালী করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে কমিটি থেকে। আরেকটি মত হচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের কাউকে দেখা যেতে পারে, আর কয়েকজনকে ভবিষ্যত নেতৃত্বের জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এক সদস্য জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কোনো মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কিংবা উপমন্ত্রীকে রাখা হবে না। কারণ সাংগঠনিক পদে যারা দায়িত্ব পান তাদের সারাদেশে সাংগঠনিক কাজে ঘুরে বেড়াতে হয়। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলানোর পর এই দায়িত্ব পালন করা কঠিন।

আওয়ামী লীগের ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদের ৪০ পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে; বাকি রয়েছে ১১টি পদ। বাদ পড়া জ্যেষ্ঠ নেতারা উপদেষ্টামন্ডলীতে স্থান পেতে দেনদরবার করছেন। রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ধরে রাখার ক্ষেত্রে অনেকে এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে এবারের কমিটিতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে রোববার দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ রেহানা, রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয়- কেউই এখনই রাজনীতিতে আসতে আগ্রহী নন।

এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আংশিক যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই। নেই কোনো চমকও। বলা চলে, পুরনো নেতাদের নিয়েই নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদায়ী কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সবাই নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। আগের কমিটির শূন্য তিন পদে নতুন করে তিনজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ঘোষিত তালিকায় তরুণদের জায়গা হয়নি। শূন্য পদগুলোতে তাদের প্রাধান্য দেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের অবদান ও ত্যাগের কথাও প্রচার করছেন অনেকে।

এখন সবার আগ্রহ নতুন কমিটির বৈঠকের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে সেখান থেকেই বেরিয়ে আসবে কার্যনির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদগুলোতে কারা আসছেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply