হোয়াইট হাউজে বেড়াতে যাওয়া কুকুরটি ‘নারী’ না ‘পুরুষ’!

|

কোনান দ্য হিরো— এই নামই দেওয়া হয়েছে বাগদাদি নিকেশ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া সেই সেনা-কুকুরকে। আইএস মাথা আবু বকর আল বাগদাদিকে ধরতে মার্কিন ডেল্টা ফোর্সে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করেছিল এই সেনা-কুকুর কোনান। সুড়ঙ্গের ভিতর বিস্ফোরণে আহতও হয়েছিল। সেই ক্ষত এখন ভরেছে অনেকটাই। ফের চনমনে কোনান। সাহসিকতার জন্য ইতিমধ্যেই কোনানকে মেডেল দিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায়, ‘‘বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কুকুর। আমার বড়ই প্রিয় কোনান।’’

গত সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে মার্কিন প্রেডিসেন্ট জানান, জঙ্গি দমন অভিযানে অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এই সেনা-কুকুর। এর প্রশিক্ষণ প্রশংসনীয়। কোনান শুধু বুদ্ধিমানই নয়, যে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারে সাহসের সঙ্গে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথায়, ‘‘কোনান জাঁদরেল সেনা-কুকুর। ওর সঙ্গে লাগতে গেলে ছেড়ে কথা বলবে না।’’

এদিকে কুকুরটি পুরুষ, নাকি নারী এ নিয়ে রীতিমত ফাইট হয়ে গেল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং পেন্টাগনের মধ্যে। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল এটি একটি নারী কুকুর। তবে হোয়াইট হাউজ সফরে যাওয়ার পর ট্রাম্প কী মনে করে দাবি করেন এটি নাকি পুরুষ! যদিও পরে হোয়াইট হাউজ নিজেদের দাবির ভুল বুঝতে পারে এবং সংশোধনী দিয়ে জানায় কোনান আসলে নারী কুকুরই।

মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, ২৬ অক্টোবর বাগদাদি নিকেশ অভিযানে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল কোনান। চিনুক এবং ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারে ডেল্টা ফোর্স-সহ এলিট বাহিনী যখন উত্তর ইরাক থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিল সিরিয়ার ইদলিবের বারিশার দিকে, সবচেয়ে বেশি চনমনে ও উত্তেজিত দেখা গিয়েছিল এই সেনা-কুকুরকে। মার্কিন বাহিনী দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে অভিযান চালায়। কপ্টার যখন ক্রমাগত গোলা বর্ষণ করে চলেছিল আইএস ঘাঁটিতে, অপর দল তখন ঢুকে পড়েছিল বাগদাদির ডেরায়। এই কুকুরই সবচেয়ে আগে ছুটে গিয়ে বাগদাদির খোঁজ দেয়। সেই মতো তার ঘরে ঢুকে পড়ে মার্কিন বাহিনী। বাগদাদিকে আড়াল করে দাঁড়ালে গুলিতে উড়িয়ে দেওয়া হয় তার দুই স্ত্রীকে।

তিন সন্তানকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে বাগদাদি যখন ওই কম্পাউন্ডের ভিতরেই এক গোপন সুড়ঙ্গের ভিতর ছুটে গিয়েছিলেন, তখন কোনানই পিছু নিয়েছিল তাদের। সুড়ঙ্গের অন্য়মুখ বন্ধ করে দিয়েছিল মার্কিন বাহিনী। খোলা মুখ দিয়ে ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল সেনা-কুকুর কোনান। অস্ত্র দেখেও রুখে দাঁড়িয়েছিল সে। ক্রমশই কোণঠাসা করেছিল বাগদাদিকে। এই কুকুরের হিংস্রতা দেখে কেঁদে উঠেছিল বাগদাদির সন্তানরা। আর্তনাদ করে উঠেছিল আইএস প্রধান। মার্কিন ডেল্টা ফোর্সের জয়েন্ট চিফ জেনারেল মার্ক মিলে জানিয়েছিলেন, সুড়ঙ্গের ভিতরে আত্মঘাতী জ্যাকেট দিয়ে যখন বিস্ফোরণ ঘটায় বাগদাদি, চোট পেয়েছিল কোনান। তাতেও অবশ্য তার তেজ কমেনি।

দক্ষ, সাহসী এই সেনা-কুকুরের নাম সেই সময় সামনে আনেনি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। বলা হয়েছিল কোনানের চিকিৎসা চলছে। তার উপর নজর পড়েছে আইএস জঙ্গিদের। তাই নিরাপত্তাও বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেডিসেন্ট বলেছেন, একটা সময় মনে করা হয়েছিল ক্ষত সারিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে না কোনান। কিন্তু দেখা যায় চিকিৎসায় খুব দ্রুত সারা দিয়েছে সে। তার চনমনে ভাব দেখে মনে হয়েছে ফের অপারেশনের জন্য একদম প্রস্তুত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply