রাস উৎসবকে ঘিরে তৎপর হরিণ শিকারি চক্র, ফাঁদসহ আটক ৬০ শিকারি

|

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের সাগর পাড়ে দুবলার চরে ১০ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া ৩ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবকে ঘিরে তৎপর হয়ে উঠেছে হরিণ শিকারি চক্র। ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসবে দেশি-বিদেশি পূণ্যার্থী ও পর্যটকদের আড়ালে সুন্দরবনে ঢুকে পড়ে চোরা হরিণ শিকারি চক্র।

এভাবে সুন্দরবনে যাবার পথে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ভোরে চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মনি এলাকা থেকে ৩টি ট্রলার ও হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ৬০ জন চোরা শিকারি আটক হয়েছে বনরক্ষকদের হাতে।

আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে হরিণ শিকারের ফাঁদ, দা, কুড়াল ও চুলাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

আটককৃতদের এসব চোরা শিকারিদের বাড়ী বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

এবার রাস উৎসবকে ঘিরে সুন্দরবনের বাঘ-হরিণসহ বন্যপ্রাণীসহ জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় পূণ্যার্থী ও পর্যটকদের যাতায়াতে ৮টি রুট নির্ধারণসহ চার দফা পূর্ব সতর্কতা জারি করেছে বন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান বলেন, আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই সব চোরা শিকারি আগামী ১০ নভেম্বর দুবলার আলোরকোলে শুরু হতে যাওয়া রাস মেলা উপলক্ষে হরিণ শিকারের উদ্দেশ্যে এই দলটি সুন্দরবনে প্রবেশ করে। আটক ৬০জন চোরা শিকারিদের কাছে সুন্দরবনে প্রবেশের কোন পাশ পারমিট নেই।

আগামী ১০ নভেম্বর ভোর থেকে সুন্দরবনের দুবলার চরে যাওয়া জন্য পূণ্যার্থী ও ভক্তদের সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি দেবে বন বিভাগ। রাসমেলা উপলক্ষে সুন্দরবনে চোরা শিকারিদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাই শিকারিরা নির্ধারিত সময়ের আগেই সুন্দরবন যাওয়ার চেষ্টা করে। মঙ্গলবার ভোরে এমনই একটি সংঘবদ্ধ হরিণ শিকারির দল ৩টি ট্রলারসহ চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মনি এলাকায় অভিযান চালায় বনরক্ষকরা।

এসময় ৩টি ট্রলার, হরিণ শিকারে ব্যবহার করা ফাঁদ, দা,কুড়ালসহ আটক করা হয়। আটকদের সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

ডিএফও আরও বলেন, এবারের রাস মেলা উপলক্ষে সুন্দরবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় বন বিভাগের সাথে নৌবাহিনী, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড, পুলিশের পাশাপাশি বনরক্ষকরাও নিয়োজিত থাকবে।

এছাড়া, কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন। এবার রাস উৎসবের নিয়মাবলীতে একটু ভিন্নতা আনা হয়েছে। অন্যান্য বছর গুলোতে পুণ্যার্থীরা রাতের বেলায় রওনা হতো। কিন্তু এবার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন কারণে ১০ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকেই তারা যাত্রা শুরু করবে। এবার রাস মেলাকে ঘিরে হরিণ ও অন্যান্য বন্য প্রাণী শিকার রোধে বন বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখবে। যে কোন মূল্যে চোরা শিকারিদের অপতৎপরতা রুখে দেয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply