চট্টগ্রামে ১১ দিনে ১৬ খুন

|

চট্টগ্রামে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে খুনোখুনির ঘটনা। ১৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ দিনে নগরী ও জেলায় ১৬টি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে কারও কারও লাশ মিলেছে নদীতে কারও বা ঝোপঝাড়ে। উল্লেখযোগ্য খুনের ঘটনার মধ্যে ছিল, স্ত্রীর হাতে স্বামী ও মেয়ে খুন, সীতাকুন্ডে ‘গরিবের ডাক্তার’ খ্যাত শাহ আলম খুন, সীতাকুণ্ডে মোবাইল চুরির সন্দেহে পুলিশের হাতে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনা। খুনোখুনির পাশাপাশি থেমে নেই ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, ছিনতাই-চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধ কর্মকাণ্ড। একই সময়ে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন চারজন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা বলেন, ‘জেলায় প্রতি মাসে ৭টি থেকে ১০টি খুনের ঘটনা ঘটছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বে খুনের ঘটনা ইদানীং বেশি ঘটছে। জেলায় চলতি মাসে সীতাকুণ্ডে দুটি খুনের ঘটনা এবং চন্দনাইশে শঙ্খ নদী থেকে এক নারীর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনার ক্লু উদ্ঘাটন করা হয়েছে। আমরা চাচ্ছি খুনের ঘটনা জিরোতে নামিয়ে আনতে। এ জন্য পুলিশ এলাকায় তৎপর আছে।’

১৯ অক্টোবর নগরীর বন্দর থানা এলাকার নিজ বাসায় খুন হন চার বছরের শিশুকন্যা ফাতেমা বেগম ও তার বাবা আবু তাহের (৩৫)। গ্রেফতারের পর নিহত শিশুটির মা হাসিনা বেগম স্বীকার করেছেন, তার কথিত প্রেমিক মাঈন উদ্দিনকে নিয়েই মেয়ে ও স্বামীকে খুন করেছেন। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর হাতে স্বামী ও মেয়েকে খুনের ঘটনা চট্টগ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

এদিকে র‌্যাবের সঙ্গে পৃথক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ডাক্তার শাহ আলম হত্যার মূল হোতা কালুসহ চারজন। এর মধ্যে ২৯ অক্টোবর ভোরে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোটকুমিরা এলাকায় র‌্যাবের টহল টিমের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তিনজন। র‌্যাবের দাবি নিহতরা ডাকাত। এ সময় দুটি অস্ত্র, ১২ রাউন্ড গুলি ও দুটি দা উদ্ধার করা হয়। এর আগে ২৩ অক্টোবর সীতাকুণ্ডে গরিবের ডাক্তার হিসেবেখ্যাত শাহ আলম হত্যার মূল আসামি নজির আহমেদ সুমন ওরফে কালু (২৬) র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

এছাড়াও ১৭ অক্টোবর পাহাড়তলি থানা এলাকায় কাভার্ডভ্যানের চাপায় নগর ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৩০) নিহত হন। পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, হঠাৎ করে অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা, প্রতিশোধপ্রবণতা বেড়ে গেছে। এগুলো অপরাধের মৌলিক নিয়ামক। এসব কারণেও মানুষ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতিও মানুষের মনে প্রতিহিংসা বৃদ্ধি করেছে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে অবহেলার কারণে অপরাধ বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply