আবারও ভাঙছে মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি?

|

কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সামনে রেখে ‘অভ্যন্তরীণ’ সংকটে পড়েছে রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে পার্টির শীর্ষ নেতারা মতাদর্শিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় ফের ভাঙনের মুখে পড়েছে সংগঠনটি।

এর আগে মতানৈক্যের কারণে গত ২২ অক্টোবর ওয়ার্কার্স পার্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য বিমল বিশ্বাস। পরে লিখিত বক্তব্যের জন্য উল্টো তাকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থান, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে থাকা না-থাকা, গঠনতন্ত্রের নিয়ম উপেক্ষা করে কংগ্রেসকে সামনে রেখে পার্টিতে নতুন সদস্য করা, সম্প্রতি ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় রাশেদ খান মেননের নাম আসা, দলকে পাশ কাটিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদে নিজের স্ত্রী লুৎফুন্নেসা খানকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করাসহ নানা ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে মতপার্থক্য চলে আসছে।

কেন্দ্রীয় কংগ্রেসকে সামনে রেখে এ মতপার্থক্য প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। এছাড়া পার্টির নেতাকর্মীদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগ- কমিউনিস্ট আদর্শভিত্তিক পার্টির যে রাজনৈতিক চরিত্র থাকা উচিত রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টি তা থেকে অনেক আগেই দূরে সরে গেছেন।

আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির চার দিনব্যাপী দশম কংগ্রেস (কেন্দ্রীয় সম্মেলন) শুরু হবে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বেলা ১১টায় কংগ্রেসের উদ্বোধন হবে। এর আগেই, পার্টির রাজনৈতিক দলিল নিয়ে দ্বিমত করে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন দলটির পলিটব্যুরোর দুই সদস্য নুরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদ। সবশেষ, সোমবার এই দুই পলিটব্যুরোর সদস্যসহ কেন্দ্রীয় কমিটির ৬ নেতা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কংগ্রেস বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সেই সাথে পার্টির সকল সদস্যদেরও কংগ্রেস বর্জনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এই অংশের নেতারা বলছেন, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম কংগ্রেসে বাম ও দক্ষিণপন্থী বিচ্যুতির সুনির্দিষ্ট বহিঃপ্রকাশগুলো চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে মতাদর্শিক সংগ্রাম করার কথা বলা হয়েছিল। সে কাজটি একেবারেই অবহেলিত ও গুরুত্বহীন থেকেছে। ফলে মতাদর্শিক শূন্যতার স্থান বুর্জোয়া, পেটি বুর্জোয়া মতাদর্শ পূরণ করেছে, আধিপত্য বিস্তার করেছে।

তারা মনে করেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নীতিনির্ধারণে শরিকদের ভূমিকা পালনের কোনো সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি, ইউনাইডেট কমিউনিস্ট লীগ ও সাম্যবাদী দল (আলী আব্বাস) মিলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠিত হয়। ১৯৯৫ সালে পলিটব্যুরোর সদস্য টিপু বিশ্বাস বেরিয়ে নতুন দল গণফ্রন্ট করেন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন বেরিয়ে যান পলিটব্যুরোর আরেক সদস্য সাইফুল হক। বর্তমানে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। কংগ্রেসকে সামনে রেখে পার্টি তৃতীয় দফায় ভাঙনের শঙ্কায় ওয়ার্কার্স পার্টি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply