ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মারমুখী অবস্থান, পুলিশের লাঠিচার্জে আহত ৩০

|

বরগুনার পাথরঘাটায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।

শনিবার পাথরঘাটা উপজেলা শহরের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে দু’পক্ষ মারমুখী অবস্থান নিলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হোসাইনকে স্বপদে বহালের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অপরদিকে এনামুলের নেতাকর্মীদের কর্মসূচিকে প্রতিহত করতে পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।

এতে সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাৎক্ষণিক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের নাম জানা যায়নি।

অন্যদিকে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পাথরঘাটার বিভিন্ন স্থানে। শুক্রবার থেকেই পাথরঘাটায় এ সব পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হোসাইনকে অনুপ্রবেশকারী উল্লেখ করে সাংগঠনিক নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে এনামুলের সমর্থক ও প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এ অবস্থায় দু’পক্ষ মুখোমুখী অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এদিকে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে দুপুর ১টার দিকে পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এনামুল হোসাইন জানান, তিনি অনুপ্রবেশকারী এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেননি এবং তিনি আওয়ামী পরিবারের সদস্য।

তিনি বলেন, আমি একটি কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার। কিন্তু প্রতিপক্ষের ছাত্রলীগ নেতারা সেই মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন পণ্ড করার জন্য আমার নেতাকর্মীদের শহরে প্রবেশ করতে দেয়নি এবং পথে পথে তাদের ওপর হামলাও করেছে। আমার সমর্থক নেতাকর্মীদের মারধর করে ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে। মারধরে আমার অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

অপরদিকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান নাইম বলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালিদ মক্কি ও পৌর সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন মধুসহ পুলিশের লাঠিচার্জে ছাত্রলীগের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গেছে।

তবে পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, এনামুল ও তার নেতাকর্মীরা যেটা করছেন, তা সম্পূর্ণ সংগঠনবিরোধী। তিনি তার পদ ফেরত পাওয়ার জন্য কেন্দ্রে আপিল করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা না করে মিছিল-মিটিং করে পাথরঘাটায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

পাথরঘাটা থানা ওসি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সাদা পোশাকধারীর পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply