হিন্দিকে ভারতের জাতীয় ভাষা করার আহ্বান প্রস্তাব অমিত শাহের

|

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ

আজ শনিবার ভারতে পালিত হলো হিন্দি দিবস। সেই উপলক্ষে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ভাষার মাধ্যমেই ভারতকে একসূত্রে বাঁধার আহ্বান জানালেন। তিনি বলেন, দেশের সর্বাধিক কথিত ভাষা হল হিন্দি। আর এই ভাষা দেশের মানুষের মধ্যে একতা তৈরির ক্ষমতা রাখে।

অমিত শাহ একথাও স্বীকার করে নেন যে, ভারত বহু ভাষাভাষীর মানুষের দেশ এবং প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। তবে তার মধ্যেই হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অমিত শাহ হিন্দি দিবসে টুইট করে ওই প্রস্তাব দেন।

প্রতি বছর ১৪ সেপ্টেম্বর দিনটি হিন্দি ভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়, যখন ভারতের গণপরিষদ হিন্দিকে ভারতের সরকারি ভাষা হিসাবে গ্রহণ করেছিল সেই দিনের তাৎপর্যকে চিহ্নিত করেই এই দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। দেবনাগরী লিপিতে রচিত হিন্দি, দেশের ২২টি তপশীলি ভাষার একটি। তবে হিন্দি হ’ল কেন্দ্রীয় সরকারের দুটি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি, অন্যটি হল ইংরেজি ভাষা।

ভারতের জাতীয় পর্যায়ে দুটি সরকারি ভাষা এবং রাষ্ট্রীয় স্তরে ২২টি তপশীলি ভাষার স্বীকৃত থাকলেও, এখনও কোনও জাতীয় ভাষা নেই। একটি জাতীয় ভাষা যখন দেশপ্রেমিক এবং জাতীয়তাবাদী পরিচয় অর্জনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়, তখন সরকারি ভাষা এবং তপশীলি ভাষাগুলি সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে মনোনীত করা হয়।

অমিত শাহের টুইটটি হিন্দিকে জাতীয় ভাষা হিসাবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য পূরণ করার ইঙ্গিত দেয়। এটির ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী লিখেছেন, “ভারত বহু ভাষাভাষীর একটি দেশ, এবং প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্ব থাকলেও বিশ্বব্যাপী পরিচিতির জন্যে একটি অভিন্ন ভাষার প্রয়োজন”।

আরও যোগ করেন, “বর্তমানে যদি এমন একটিও ভাষা থাকে যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে, তবে তা হল হিন্দি ভাষা। এই ভাষাটি ভারতের সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সহজবোধ্য ভাষা”।

তবে গত জুনে, নতুন শিক্ষাগত নীতি ২০১৯- এর খসড়ার পরে দেশ জুড়ে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল মোদি সরকারকে, বিশেষত দক্ষিণ রাজ্যগুলি থেকে চরম প্রতিবাদ আসে। দেশের সমস্ত স্কুলে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। আর তারপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে দক্ষিণের রাজ্য গুলি।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন এবং বলেন, “প্রত্যেক রাজ্যেরই আলাদা আলাদা চরিত্র এবং আলাদা আলাদা ভাষা রয়েছে। আঞ্চলিক ভাষাগুলিকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। আঞ্চলিক ভাষার প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমর্থন আছে। মাতৃভাষাকে এবং তারপরে অন্যান্য ভাষাগুলিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।”

দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভের পর কেন্দ্রীয় সরকার নতুন শিক্ষাগত নীতি ২০১৯- এর খসড়ার এই অংশটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে জাতীয় হিন্দি দিবসে আবার ওই ভাষার পক্ষে সওয়াল করে আগের সম্ভাবনাকে ফের উস্কে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সূত্র: এনডিটিভি


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply