আফিফ-সৈকতের ব্যাটে অবিশ্বাস্য জয়

|

আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৪৫ রানে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯.৩ ওভারে ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। হার যখন সময়ের ব্যাপার বলে মনে হচ্ছিল তখন ক্রিজে নামেন আফিফ। সপ্তম উইকেটে মোসাদ্দেককে সাথে নিয়ে যোগ করেন ৮২ রান এতেই হারতে বসা ম্যাচ হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে টাইগাররা।

কোনো ধরনের নার্ভাসনেস ছাড়াই প্রথম বলটি বাউন্ডারিতে পাঠান আফিফ। ঠাণ্ডা মাথায় ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুড়ি। ৮ চার আর ১ ছয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। অন্যপ্রান্তে মোসাদ্দেকও যোগ্য সমর্থন দিয়ে গেছেন। ২৬ বলে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

জয় থেকে ৩ রান দূরে থাকতে বাউন্ডারি হাকাতে গিয়ে ২৬ বলে ৫২ রান করে মাসাকাদজার হাতে বন্দি হয়ে ফেরেন আফিফ। কিন্তু তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। ২ বলে ৬ রান তুলে বাকি কাজ শেষ করেন আরেক তরুণ সাইফউদ্দিন। ফলে ২ বল বাকি থাকতেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগার বাহিনী।

বৃষ্টির কারণে মাঠ ভেজা থাকায় নির্ধারিত সময়ের সোয়া এক ঘণ্টা পর খেলা শুরু হয়। বিলম্বে খেলা শুরু হওয়ায় ২০ ওভারের পরিবর্তে খেলা নির্ধারিত হয় ১৮ ওভারে। টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসেই সাফল্য পান তাইজুল ইসলাম। টেস্ট স্পেশালিস্ট বোলার হিসেবে খ্যাতি পাওয়া বাঁহাতি এ স্পিনারের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে থার্ডম্যানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ব্রান্ডন টেইলর। তার বিদায়ে ১.১ ওভারে দলীয় ৭ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ের।

এর আগে প্রথম ওভারে ৭ রান খরচ করেন সাকিব আল হাসান। তার করা প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ছিলেন টেইলর।

ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ক্রেইগ আরভিনকে সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে ক্যাচ তুলে দেন আরভিন। ৬.৪ ওভারে দলীয় ৫১ রানে সাজঘরে ফেরেন জিম্বাবুয়ের এই তারকা ব্যাটসম্যান। ১৪ বলে ১১ রান করেন আরভিন।

এরপর ১২ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। ইনিংসের শুরু থেকে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে খেলায় রাখেন তিনি। সাইফউদ্দিনের বলে সাব্বির রহমান রুম্মনের হাতে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ২৬ বলে পাঁচটি চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।

ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন শন উইলিয়ামস। মোস্তাফিজের বলে রান আউট হয়ে ফেরেন টিমিকেট মারুমা। তার বিদায়ে ৯.৩ ওভারে দলীয় ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে দলকে সম্মানজনক স্কোর উপহার দেন রায়ান বার্ল। ষষ্ঠ উইকেটে তিনি টিনোটেন্ডা মুটুমবদজিকে সঙ্গে নিয়ে নিয়ে ৫১ বলে ৮১ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে তিনটি ছক্কা ও তিনটি চার হাঁকিয়ে ৩০ রান আদায় করে নেন রায়ান। তার ৩২ বলের অপরাজিত ৫৭ রানে ভর করে নির্ধারিত ১৮ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ দলের হয়ে ৪ ওভারে সর্বোচ্চ ৪৯ রান খরচ করেন সাকিব। তিনি কোনো সাফল্য পাননি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ১৮ ওভারে ১৪৪/৫ (টেইলর ৬, মাসাকাদজা ৩৪, আরভিন ১১, উইলিয়ামস ২, মারুমা ১, বার্ল ৫৭*, মুটোম্বোডজি ২৭*; সাকিব ০/৪৯, তাইজুল ১/২৬, সাইফুদ্দিন ১/২৬, মোস্তাফিজ ১/৩১, মোসাদ্দেক ১/১০)।

বাংলাদেশ: ১৭.৪ ওভারে ১৪৮/৭ (লিটন ১৯, সৌম্য ৪, সাকিব ১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ১৪, সাব্বির ১৫, মোসাদ্দেক ৩০*, আফিফ ৫২, সাইফ ৬*; উইলিয়ামস ০/৩১, জার্ভিস ২/৩১, চাতারা ২/৩২, বার্ল ১/২৭, মাডজিভা ২/২৫)।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply