হাসপাতালের সিঁড়িতে অসহায় নবজাতকের আর্তচিৎকার!

|

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

জন্মের পর মাতৃক্রোড়ে ভাবনাহীনভাবে বেড়ে ওঠার কথা থাকলেও ১ দিনের এই ছেলে শিশুটির ঠাঁই হয়েছে কিশোরগঞ্জে জেনারেল হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে।

জন্মদাত্রী মা জন্মদাতা পিতার স্নেহ ও ভালবাসার পরিবর্তে জন্মের পর-ই সে দেখলো নিষ্ঠুর পৃথিবীর এমন ভয়ঙ্কর রূপ। হাসপাতালেরই সিঁড়ি থেকে উদ্ধারের পর পিতৃ-মাতৃহীন এবং অজ্ঞাত পরিচয়ে এখানে ৯ দিন ধরে ভর্তি আছে শিশুটি। এ হিসাবে তার বয়স আজ মঙ্গলবার ১১ দিনে পড়েছে।

আইন কর্মকর্তা বলছেন, খবর পেয়ে বেশ ক’জন হৃদয়বান ব্যক্তি এ নবজাতককে দত্তক নিতে সমাজকল্যাণ বিভাগের সুপারিশ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। কিন্তু; মুসলিম দত্তক আইন না থাকায় ঝুলে আছে আদালতের সিদ্ধান্ত। এ ধরনের অসহায় ও পিতৃ-মাতৃহীন শিশুদের দিক বিবেচনায় অবিলম্বে মুসলিম দত্তক আইন প্রবর্তনের দাবি সমাজকর্মীদের।

জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট ২৫০ শয্যার কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়ে ১/২ দিন বয়সের এ নবজাতককে আর্তচিৎকার ও কাঁদতে দেখে লোকজন ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গোচরে আনে।অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও তার পিতামাতা কিংবা কোনো স্বজনের সন্ধান না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে উদ্ধার করে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করে সেবা শুশ্রূষার দায়িত্ব নেয় এবং বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ ও সমাজকল্যাণ বিভাগকে অবহিত করেন।

সমাজকল্যাণ বিভাগও ইতিমধ্যেই নবজাতকের অভিভাবক নির্ধারণে আদালতের নির্দেশনা চেয়ে সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সুলতানা রাজিয়া এবং কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মায়া রাণী ভৌমিক বলেন, অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি এ ধরনের অসহায় ও অনাথ নবজাতক এবং শিশু- কিশোরদের পাশে দাঁড়াতে চাঁন, দত্তক নিতে কিংবা অভিভাবক হতে চান। কিন্তু; মুসলিমদের ক্ষেত্রে দত্তক আইন না থাকায় মানবিক উদ্যোগ ভেস্তে যায়। তিনি অবিলম্বে মুসলিম দত্তক আইন প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক জানান,আমাদের দেশে মুসলিমদের জন্যও এ আইনটি ছিল, কিন্তু এ আইনটির যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে ১৯৮২ সালের দিকে রহিত করা হয়। তবে, এখনকার বাস্তবতায় এ আইন পুনঃপ্রবর্তন জরুরি হয়ে ওঠেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply