রাজধানীর বাইরের ডেঙ্গুরোগী: ঢাকায় এসে আক্রান্ত ৬৪ শতাংশ

|

রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের ৬৪ শতাংশই ঢাকায় এসে আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ ঢাকায় অবস্থানকালে বা ভ্রমণের জন্য এসেই তারা এ রোগে আক্রান্ত হন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) এক জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য। ১ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ঢাকার বাইরের রোগীদের ওপর এ জরিপ পরিচালনা করা হয়।

আইইডিসিআরের জরিপে উল্লেখ করা হয়, ১ আগস্ট ২০১৯ হতে হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে জ্বরের লক্ষণ প্রকাশের কাছাকাছি সময়ে থেকে ২ সপ্তাহ পূর্বে পর্যন্ত ঢাকায় ভ্রমণের ইতিহাস পাওয়া গেছে। জ্বরের লক্ষণ প্রকাশের প্রথম দিন থেকে ১০ দিনের মধ্যে তারা ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় ফিরেছেন। অথবা ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গেছেন। সেখানে গিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড সেন্ট্রাল রুমের তথ্য অনুযায়ী ঢাকাসহ সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১১৭৯ জন নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬০৯ জন। ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬২ হাজার ২১৭ জন।

এর মধ্যে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন ৫৫ হাজার ৮৮১ জন। আর এ সময়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৭ জন। তবে শনিবার সারা দেশে ৫ মাস বয়সী এক শিশুসহ চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ সংখ্যা এখনও সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ নিয়ে যুগান্তরের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী চলতি মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮ জনে।

আইডিসিআরের উল্লিখিত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৫ দশমিক ০ ভাগ মানুষ আক্রান্তের পূর্বে ঢাকায় ৩ দিন অবস্থান করেছেন। এছাড়া আক্রান্তদের ২২ দশমিক ১ শতংশ ঢাকায় ভ্রমণ করেছেন দু’দিন, ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ ভ্রমণ করেছেন ৫ দিন এবং ১৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষের ৪ দিন পূর্বে ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ঢাকায় অবস্থাকালে ডেঙ্গু জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পরে ঈদের ছুটিতে ঢাকার বাইরে যান। ফলে ঈদের ও ঈদ পরবর্তী সময়ে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি দেখা গেছে।

বাকিরা কিভাবে আক্রান্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাকিরা সম্ভবত স্থানীয় ভাবে আক্রান্ত হয়েছে। তবে তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি জরিপ বর্তমানে বরিশালে পরিচালিত হচ্ছে। এর ফল পাওয়া গেলে এবং ইতিমধ্যে পরিচালিত জরিপের ফলের সঙ্গে সমন্বয় করে সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য দেয়া যাবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply